যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা বাতিলের ৫০ শতাংশই ভারতীয় শিক্ষার্থীদের
আপলোড সময় :
১৯-০৪-২০২৫ ১০:৫৫:৫১ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
১৯-০৪-২০২৫ ১০:৫৫:৫১ পূর্বাহ্ন
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বেশকিছু ভিসা বাতিল করা হয়েছে। আমেরিকান অভিবাসন আইনজীবী সমিতি (এআইএলএ) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সম্প্রতি বাতিল হওয়া ৩২৭ শিক্ষার্থী ভিসার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই ছিল ভারতীয়।
এআইএলএর ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিবাসন প্রয়োগকারী পদক্ষেপের পরিধি’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর মধ্যে ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থী চীনের, বাকিরা দক্ষিণ কোরিয়ার, নেপাল ও বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে এসেছেন।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) গত চার মাস ধরে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের তথ্য পর্যালোচনা করছে। কিছু সূত্রের দাবি, এই পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা হচ্ছে। যার কারণে, অপরাধী ইতিহাস বা ক্যাম্পাস আন্দোলনের সঙ্গে কোনো সংযোগ না থাকা শিক্ষার্থীদেরও ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তু করছে।
চলতি বছরের মার্চে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ‘ধরো এবং বাতিল করো’ নামে একটি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভিসাধারীদের শনাক্ত ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে, কেউ ইসরায়েলবিরোধী বা হামাসপন্থি কোনো বিক্ষোভ কিংবা সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন কি না বা হামাসের পক্ষে কোনো মত প্রকাশ করছেন কি না।
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (ডিএইচএস) শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ ভিজিটর তথ্য ব্যবস্থার (এসইভিআইএস) মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ট্র্যাক করা হয়। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৭৩৬ জন শিক্ষার্থীর ভিসা এসইভিআইএস সিস্টেমে বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগেরই ছিল এফ-১ ভিসা।
এআইএলএ এই পর্যবেক্ষণকে নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করেছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনয়নে মামলার প্রয়োজন হত পারে।
এই ভিসা বাতিলের বড় একটি অংশ অপশনাল প্র্যাক্টিক্যাল ট্রেইনিং (ওপিটি) প্রোগ্রামের আওতাভুক্ত শিক্ষার্থী। ওপিটি প্রোগ্রামের অধীনে শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের স্নাতক ডিগ্রির পরে ১ বছর থেকে ৩ বছর পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। কিন্তু ভিসা বাতিলের কারণে তারা এখন আর কাজ করতে পারছেন না। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ ইয়র্ক, মিশিগান এবং অ্যারিজোনা।
এই বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে জানান, আমরা জানি, অনেক ভারতীয় শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে এফ-১ ভিসা সম্পর্কিত বিজ্ঞপ্তি পেয়েছেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি এবং আমাদের দূতাবাস ও কনসুলেট সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
এছাড়া বার্তা সংস্থা এপির একটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মার্চের শেষ থেকে প্রায় ১ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে বা তাদের আইনি অবস্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। যদিও বেশিরভাগ ভারত ও চীনের নাগরিক। তবে, আইনজীবীদের মতে, এই পদক্ষেপ কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নয়। যারা ইসরায়েলবিরোধী মনোভাব প্রকাশ করেছেন বা করছেন, তাদের ওপরেই এই কঠোরতা প্রযোজ্য হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স